Header Ads Widget

Responsive Advertisement

তেপান্তর নাট্যগ্রামে নাটকের মজলিস

নিউজ ডেস্ক, কলকাতা: সম্প্রতি তেপান্তর নাট্যগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নহলী নাট্যদল প্রযোজিত নাটকের মজলিস ২। সহযোগিতায় ছিল 'এবং আমরা'। দুদিনে তাদের মোট চারটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। ঘুড়ি, কাক কথা, মধুবংশীর গলি এবং কুঁজো আর ভূত। চারটে নাটকই সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের। তাছাড়া এই নাট্যোৎসব আলাদা করে নজর কাড়ে দুটি কারণে।



এক, নাটকে লাইভ মিউজিকের ব্যাবহার। দুই, শুধুমাত্র একটি দলেরই নাট্য প্রযোজনা ও পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হওয়া নাট্যোৎসব। প্রথম দিন মঞ্চস্থ হয় ঘুড়ি ও কাক কথা নাটকটি। দ্বিতীয় দিন মঞ্চস্থ হয় মধুবংশীর গলি এবং কুঁজো আর ভূত নাটক দুটি। নাট্যোৎসবের উদ্বোধন করেন প্রণব ভট্টাচার্য, নীলাভ চ্যাটার্জী এবং কল্লোল ভট্টাচার্য। 



সচ্ছল পরিবারে বেড়ে ওঠা মা বাবার একমাত্র সন্তান নয় বছরের ছেলে বিহান। পরে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। পড়াশোনার বাইরে তার একমাত্র জগৎ মা-বাবা আর তার ঘর। ইতিমধ্যে বিহান স্কুল থেকে একদিন নাটক করার সুযোগ পায়। ডাকঘর নাটকের অমল হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। এই পরিবারের পরিচারিকা কমলার ছেলে শঙ্কর। বিহানের থেকে বছর চারেকের বড়। 


পড়াশোনার থেকে খেলাধুলা, ঘুড়ি ওড়ানো তে তার বেশি উৎসাহ। শঙ্কর এর সঙ্গে বিহানের ভাল বন্ধুত্ব হয়ে যায়। কিন্তু সেই বন্ধুত্বে একসময় ছেদ পড়ে যায়। এই ঘুড়ি নাটকে পড়ার চাপে হারিয়ে যাওয়া শৈশবের কথা উঠে আসে। পাশাপাশি এ নাটক শ্রেণী বৈষম্যের কথাও বলে। যা বিভাজন ঘটায় বন্ধুত্বেও। স্কুলপড়ুয়া বিহান চরিত্রে অভিনয় করেছে শিশুশিল্পী সিদ্ধার্থ কুন্ডু। নাটকটি যৌথ নির্দেশনায় অপু আইচ ও শৈবাল দাস। 

পরিবেশকে ক্রমশ আমরা বিপদের মুখে থেকে দিচ্ছি। গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, পুকুর বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসবের ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তাই পশুপাখির জীবনও বিপন্ন। একটি তৃষ্ণার্ত কাকের গল্প অবলম্বনে নির্মিত কাক কথা নাটকটি। এই নাটকে প্রধান চরিত্র একটি কাক। একটু জলের জন্য নানা প্রান্তে ঘুরেও সে খাবার জল পায় না। বর্তমান সময়ে খুবই প্রাসঙ্গিক এই নাটক কারণ নাটকটিতে সামাজিক বার্তা রয়েছে। 

কাক চরিত্রে শৈবাল দাস এর অভিনয় মন ছুঁয়ে যায়। নাটকটির নির্দেশকও তিনি। 'মধুবংশীর গলি' দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাবসর নেওয়া একজন প্রধান শিক্ষক ও তার আদর্শে গড়ে ওঠা এক ছাত্রের গল্প। কিন্তু আচমকা এক ঘটনায় মাস্টারমশাই হারান তার সম্মান, আর ছাত্র হারায় তার বিশ্বাস। দীর্ঘ কুড়ি বছর পর ঘটনাচক্রে তারা মুখোমুখি হয়। আর তখনই সমস্ত বিশ্বাস-অবিশ্বাসের পর্দা সরে গিয়ে প্রকৃত সত্য সামনে আসে। 


নাটকে প্রধান শিক্ষকের চরিত্রে অপু আইচের অভিনয় নজর কাড়ে। নাটকটির নির্দেশনাতেও তিনি। দ্বিতীয় দিনের শেষ পরিবেশনা ছিল কুঁজো আর ভূত। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত এই নাটক। যার নাট্যরূপ দিয়েছেন সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। নির্দেশনায় শৈবাল দাস।নাচ গান আর কথার মোড়কে সমাজের ভালো-মন্দের একটা রূপ উঠে আসে এই নাটকে। ছোট থেকে বড় সকলকে আনন্দ দেয় এই নাটকের পরিবেশনা।

Post a Comment

0 Comments